করোনা ভাইরাসের কারনে জর্জিয়া বাংলাদেশ সমিতির কার্যক্রম স্থগিত
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের বাংলাদেশি কমিউনিটির মূল সংগঠন জর্জিয়া বাংলাদেশ সমিতির কার্যকরী কমিটির এক জরুরী সিদ্ধান্তবলে চলমান করোনা ভাইরাসের সংকটাপন্ন পরিস্থিতির কারনে ইতোপূর্বে স্থগিত হওয়া সাধারণ সভাসহ সংগঠনের সকল প্রকার সামাজিক, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
কার্যকরী কমিটির ওই ঘোষণায় অন্তত পক্ষে আগামী এক বছর পর অথবা ভাইরাস মুক্ত অনুকূল পরিবেশ ফিরে এলেই এই কার্যক্রমকে আবারও সচল করে তোলা হবে জানানো হয়েছে।
সমিতির সভাপতি, দুই সহ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কার্যকরী কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তা ও সদস্যদের স্বাক্ষরিত গত ১৪ আগস্ট তারিখের ওই জরুরী ঘোষনা পত্রে চলমান করোনাকালীন সংকটকালে বাংলাদেশি কমিউনিটির সকলকে স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী মাস্ক ব্যবহার, ৬ ফুট সামাজিক দুরত্ব ও জন সমাগম পরিহার করার অনুরোধ জানানো হয়।
এক প্রশ্নের উত্তরে সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা কামাল মাহমুদ বাঙালির প্রবাসকে বলেন, “করোনার কারনে অন্তত এক বছরের জন্যে কার্যক্রম স্থগিতের কথা বলা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসির অনুমোদন সাপেক্ষে অনুকূল পরিবেশ যখনই ফিরে আসবে, তখন থেকেই আমাদের সকল কার্যক্রম আবারও শুরু করা হবে। সেক্ষেত্রে সাধারণ সভা সম্পন্ন করাসহ মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কারনে আগামী নতুন কমিটি নির্বাচনের জন্যও নির্বাচন কমিশন গঠনের যথারীতি পদক্ষেপ নেয়া হবে।“
এব্যাপারে মোস্তফা কামাল মাহমুদ সকল আজীবন সদস্যসহ সাধারন সদস্য ও সর্বস্তরের বাংলাদেশিদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সাধারণ সম্পাদক এ এইচ রাসেল বলেন, “বর্তমান কমিটির তত্ত্বাবধানে আমরা ইতোমধ্যেই সংগঠনের ওয়েব সাইট নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি। সেই সাইটে সংগঠনের সকল প্রকার প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দেয়া রয়েছে। সদস্যদের নানা প্রশ্নের উত্তরও সেখান থেকে পাওয়া যাবে। এছাড়া আমাদের সম্পাদিত সব চাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজ সমিতির নিজস্ব বাসভবনটিকে কমার্শিয়াল জোনে রূপান্তরিত করতে সিটি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন করিয়ে নেয়া হয়েছে এবং সেখানে কমপক্ষে আটটি কন্ড হাউজ নির্মান ও সেগুলো বিক্রীর মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ দিয়ে বৃহদাকার জমি ক্রয়ের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব এবং সেই জমিতে বাংলাদেশ ভবন নির্মাণসহ অডিটোরিয়াম স্থাপন করার সম্ভাবনাও তৈরি হবে। এসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নকশা প্রকোশলীর মাধ্যমে নির্মান শেষে সিটি কর্তৃপক্ষ থেকে অনুমোদনের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হয়েছে। কাজেই এই মুহূর্তে আমাদেরকে অনুকুল পরিবেশের জন্য শুধু অপেক্ষা করতে হবে।”
এর আগে গত ৫ আগস্ট তারিখের কমিটির অপর একটি ভার্চুয়াল সভায় ৯ আগস্টের নির্ধারিত সাধারণ সভাটিও কোভিট-১৯এর ব্যাপকতার কারন দেখিয়ে স্থগিত করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৮ আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বর্তমান কমিটি পূর্ণ প্যানেলে নির্বাচিত হলে গত ২ সেপ্টেম্বর তারিখে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্বভার গ্রহণ করে। সেই হিসেব অনুসারে এবছরের ২ সেপ্টেম্বরের পর থেকেই বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা।
এদিকে করোনা ভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতির কারনে জর্জিয়া বাংলাদেশ সমিতির সাধারণ সভাসহ সকল কার্যক্রম স্থগিত করায় কোন কোন সংগঠক সামাজিক মাধ্যমে বিরোধিতা করেন।
অবশ্য এই বিরোধিতার প্রতিবাদ জানিয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানান ২০১৮ সালের কার্যকরী কমিটি নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার মশিউর রহমান চৌধুরী। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে মশিউর বলেন, “বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব জর্জিয়ার সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত না করা নিয়ে সম্প্রতি কতিপয় ব্যক্তি যে নালিশ এবং অসন্তুষ্টি প্রকাশ করার চেষ্টা করছে, সেটি আমাকে বিস্মিত করেছে। এ বছরের শুরু থেকে পৃথিবী ব্যাপী এবং মার্চ মাস থেকে জর্জিয়া রাজ্যসহ যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ রাজ্যে যে মরণব্যাধি করোনা ভাইরাস মহামারী আকারে বিদ্যমান, এরূপ পরিস্থিতিতে কোন অবস্থাতেই যে কোনো দায়িত্ববান ব্যক্তির পক্ষে এরূপ হাস্যকর নালিশ এবং অসন্তুষ্টির প্রতি মনযোগ দেয়া নিতান্তই অপ্রয়োজনীয় বটে । সকলেই বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব জর্জিয়ার সফলতা চাই, তাতে কোনো সন্দেহ নেই । তবে একজন প্রকৃত সমাজ সেবক অকারণে শুধু সমালচনার জন্যই সমালোচনা না করে সংশ্লিষ্ট যে কোনো বিষয়ে সর্বদাই দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করবে, এটিও সকলের প্রত্যাশা।”